স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের খেলা মানেই গ্যালারিতে তাঁর উপস্থিতি অনিবার্য। তবে অন্য সমর্থকদের মতো নয়। ‘টাইগার শোয়েব’খ্যাত এই ভক্ত মাঠে আসেন বাঘের ডোরাকাটা সাজে পুরো শরীর রাঙিয়ে। গ্যালারিতে বসে লাল–সবুজের পতাকা ওড়াতে ওড়াতে ক্লান্তিহীনভাবে এই ‘বাঘ’ অনবরত গর্জন ছোড়েন ‘বাংলাদেশ–বাংলাদেশ’ বলে। দুই মাস আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজেও বাংলাদেশ দলের এই নিয়মিত সমর্থক গ্যালারিতে বসে দূর থেকে দিয়েছেন সাকিবদের উৎসাহ।
তবে এবার ছেদ পড়েছে সেই চেনা দৃশ্যে। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া কড়া শর্তে মাঠে ঢুকতে পারেননি শোয়েব। কিন্তু ‘শর্ত’ দিয়ে কি আর প্রিয় দলের খেলা দেখা থেকে দূরে রাখা যাবে তাঁকে? সেটি যে হওয়ার নয়!
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ দেখতে শোয়েব কজন সঙ্গী সমর্থককে নিয়ে শোয়েব উঠে গেছেন নবনির্মিত ১২তলা একটি ভবনের ছাদে। সেই ভবনটি স্টেডিয়ামের অনেকটা দূরে বলে সেখান থেকে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না মাঠের দৃশ্য। তাতে কি! যা দেখা যাচ্ছে তাতেই পতাকা ওড়াতে ওড়াতে শোয়েব অনবরত গলা ফাটাচ্ছেন আফিফদের জন্য। সে দৃশ্য এক ফাঁকে দেখাল সম্প্রচারকারী টেলিভিশনও।
মাঠের অনেকটা দূরে বলে শোয়েবের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ নেই। রাত ৭টার দিকে মোবাইল ফোনেই কথা হলো শোয়েবের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন ব্যাটিং করছিলেন সাকিব আল হাসান। সাকিব মিড উইকেটের দিকে একটা বল ঠেলতেই শোয়েব কথার মাঝখানেই বলে উঠলেন, ‘সাকিব! সাকিব!’ এর ফাঁকে ফাঁকে শোনালেন কীভাবে উঠলেন ছাদে, কেনই বা উঠলেন।
শোয়েব বলেন, ‘চেষ্টা করলে মাঠে ঢুকতে পারতাম। কিন্তু গ্যালারিতে তো বসতে পারতাম না। হয়তো খেলা দেখতে হতো গ্লাসবন্দী রুমের ভেতর থেকে। কিন্তু যেখান থেকে আমার দেশের পতাকা ওড়াতে পারব না, সেখানে বসে খেলা দেখতে চাই না। এজনই ভবনের ছাঁদে ওঠা।’
কত তলা ভবনে উঠলেন? এই প্রশ্নে শোয়েব সহায়তা নিলেন পাশের আরেকজন থেকে। বললেন, ‘১২ তলা ভবনে উঠেছি। লিফট নেই বলে হেঁটেই উঠতে হয়েছে। তবে এই কষ্ট মিলিয়ে গেছে। দূর থেকে হলেও বাংলাদেশের খেলা কিছুটা দেখতে পারছি বলে।’
বাঘ সেজে বাংলাদেশ দলকে মাঠে উৎসাহ দেওয়ার রীতি প্রথম চালু করেছিলেন পেশায় মোটর মেকানিক এই শোয়েবই। ২০১২ এশিয়া কাপে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ তাঁর সমর্থনযাত্রা শুরু, চলছে এখনো। তবে শোয়েব এবার দেখিয়ে দিলেন প্রিয় দলকে উৎসাহ দিতে সব কষ্টই তিনি মেনে নিতে রাজি। সিঁড়ি ভেঙে ১২তলা ওঠা তো সেখানে নস্যি!