যাত্রাবাড়ীতে মহাসড়কে গাদাগাদি করে ভ্যানযাত্রা

যাত্রাবাড়ীতে মহাসড়কে গাদাগাদি করে ভ্যানযাত্রা
নিজস্ব প্রতিবেদক : যতই দিন যাচ্ছে ততই বিধিনিষেধের মধ্যেও মানুষের চলাচল বাড়ছে। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষের চলাচল ছিল আগের যেকোন দিনের তুলনায় বেশি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রাইভেটকার, পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়াও রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। এছাড়া এ মহাসড়কে ভ্যানে করে মানুষের চলাচলও অনেক বেড়েছে। ভ্যানে মানুষকে গাদাগাদি করে চলাচল করতে দেখা গেছে।

তবে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এভাবে ভ্যানে যাতায়াত প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মানুষের অনুনয়-অনুরোধের কারণে অনেক ক্ষেত্রে খুব একটা সফল হচ্ছেন না তারা।

রায়েরবাগে দেখা যায়, একটি ভ্যানে আটজন উঠেছেন। যাত্রীদের কারো কাঁধে ট্রাভেল ব্যাগ আবার কারো হাতে ফাইলপত্র। তারা সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শনির আখড়া যাচ্ছেন। রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে ডেমরা জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট সুলতানুল আরেফিন ভ্যানটি থামিয়ে দেন।

সেখানে যাত্রী শামীম হোসেন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পরশু ফ্লাইট, তাকে তাই টিকা দিতে নিয়ে যাচ্ছি। যাওয়ার তো কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে ভ্যানে গাদাগাদি করে যাচ্ছি।’

আরেক যাত্রী ফরিদ হোসেন বলেন, ‘আমি আসছি মদনপুর থেকে। হাঁটছি মাঝে আবার গাড়িতে উঠে সাইনবোর্ড পর্যন্ত আসছি। সেখান থেকে এই ভ্যানে উঠছি। আমার বাসা শনির আখড়ায়। সেখানে আমরা মা আছে। আমি ঈদের সময় গ্রামে গেছিলাম।’

আরেক যাত্রী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার বাসা চানখারপুল। আমার খুব কাছের বন্ধুর স্ত্রী মারা গেছে নারায়ণগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকায়। গতকাল সেখানে গেছিলাম। এখন বাসায় যাচ্ছি। কোনো গাড়ি নাই। বাধ্য হয়ে ভ্যানে উঠছি। বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ১০ টাকা। সেখানে ভ্যানে ৫০ টাকা দিতে হচ্ছে।’

সানারপাড়ের বাসিন্দা মো. বাছেত মিয়া। তিনি সেগুনবাগিচায় ভ্যাট অফিসে যেতে আরেকটি ভ্যানে উঠেছেন। ভ্যান যাবে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত। তিনি বলেন, ‘ভ্যাট অফিসে আমার খুব জরুরি কাজ। আমি ফোন দিয়েছিলাম, অফিস খোলা। তাই ভ্যানে করেই রওয়ানা হইছি।’

করোনার টিকা দিতে বেরিয়েছেন শামসুল ইসলাম, হাতেই তার টিকার কাগজ। তিনি বলেন, ‘এভাবে ভ্যানে যাওয়ায় ঝুঁকি আছে সেটা বুঝি কিন্তু উপায়ও তো নাই। রিকশা ভাড়া আকাশচুম্বী, ভ্যানে তাও কিছুটা কম।’

এই মহাসড়কের রায়েরবাগে দায়িত্ব পালনকারী ডেমরা ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট সুলতানুল আরেফিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মানুষের চলাচলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে এবং সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিধিনিষেধ নিশ্চিতের চেষ্টা করছি আমরা। মানুষ নানান প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে। তারা নিয়মের মধ্যে থাকছেন কি না তা দেখছি। মহাসড়কে আমরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং ইজিবাইক অ্যালাউ করছি না।’

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আটদিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।

বিধিনিষেধের মধ্যে বন্ধ আছে সব ধরণের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান এবং শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।

More News...

পৃথিবীর বৃহত্তম দুর্নীতিতে বিজেপি: ভারতের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর মন্তব্য

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল