চাকরীচ্যুত বিজিবি সদস্যের প্রতারণার ফাঁদ, ৫ নারীকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

চাকরীচ্যুত বিজিবি সদস্যের প্রতারণার ফাঁদ, ৫ নারীকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবশেষে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে মারুফ শেখ (৪০) নামের এক যুবক। আটক মারুফ শেখ চাকরীচ্যুত বিজিবি সদস্য। ২০১৪ সালে সে চাকরিচ্যুত হয়। সে বাগেরহাট সদরের শ্রীঘাট গ্রামের রমজান আলী শেখের ছেলে। এ পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে অন্তত পাঁচটি বিয়ের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যেক শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৫-১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মারুফ শেখের গ্রেফতারের খবর পেয়ে প্রতারণার শিকার অন্তত ২০ – ২৫ জন নারী-পুরুষ থানায় হাজির হন। তারা তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানান।
২০০৪ সালে খুলনার ফুলতলার দামুদার এলাকার সালাম সরদারের মেয়ে নূপুরকে বিয়ে করে। ২০১৮ সালে বাগেরহাটের শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার সোবহানের মেয়ে সালমা বেগম, ২০১৯ সালে একই উপজেলার সোনাতলার মনা মল্লিকের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার, ২০২০ সালে শরণখোলার কবির হাওলাদারের মেয়ে কারিমা বেগম, সর্বশেষ বিয়ে করে শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার সুলতান জোয়াদ্দারের মেয়ে জেসমিন আক্তারকে। কখনও সেনা বাহিনীর মেজর, কখনও গোয়েন্দা কর্মকর্তা, কখনও র‍্যাবের কর্মকর্তা অথবা নিজেকে ক্ষমতাশীল ব্যক্তি হিসেবে প্রকাশ করে বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছিল মারুফ শেখের কাজ।
সর্বশেষ স্ত্রী শরণখোলা উপজেলার জেসমিন আক্তারের মামলায় বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) রাতে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামুদার এলাকা থেকে শরণখোলা থানা পুলিশ মারুফকে গ্রেপ্তার করে।মামলার বাদী জেসমিন আক্তার বলেন, এলাকার পরিচিত ঘটক আইয়ুব আলীর প্রস্তাবে বাবার সম্মতিতে তিন লাখ টাকা কাবিনে বাগেরহাটের একটি কাজী অফিসে মারুফ শেখের সাথে আমার বিয়ে হয়।আমাদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়েছে মারুফ। তার প্রতারণার কথা জানতে পেরে অনেক চেষ্টা করে মূল ঠিকানা খুঁজে বের করে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করি। ঘটক আইয়ুব আলী প্রতারক মারুফের সহযোগী। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকার ভাগ সে ও পায়।
মোরেলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনিয়া পারভীন বলেন, শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার সুলতান জোয়াদ্দারের মেয়ে জেসমিন আক্তার মারুফ শেখের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় আমরা মারুফকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলার তদন্তে আমরা মারুফের পাঁচটি বিয়ের সত্যতা পেয়েছি। প্রত্যেক শ্বশুরবাড়ি থেকে মারুফ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সে এসব অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। মারুফ শেখকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মারুফের প্রতারণার সাথে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে।

More News...

রোববার থেকে চালের বস্তায় তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক

বিএনপি বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের