সাতক্ষীরা মেডিকেলে অক্সিজেন বিপর্যয়ে ৭ মৃত্যুর অভিযোগ

সাতক্ষীরা মেডিকেলে অক্সিজেন বিপর্যয়ে ৭ মৃত্যুর অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন বিপর্যয়ের কারণে ৭ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় পর এ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হলে এসব রোগীর মৃত্যু হয় বলে একাধিক স্বজন অভিযোগ করেন।

তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ একজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহের ফলে জানায় তারা।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট দেখা দেওয়ার কথা না। তারপরও বিপর্যয়ের কথা শুনেছি। সেটা সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করে ফেলা হয়। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়াও ৭০টির বেশি সিলিন্ডার আছে। কয়েকজন মারা গেছেন। তবে করোনায় চারজন মারা গেছেন। এখানে কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা খতিয়ে দেখবে স্বাস্থ্য বিভাগ।

হাসপাতালের একজন স্টাফ নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, অক্সিজেন বিপর্যয় ঘটে এবং ছয়জন মারা যান। তবে তা অক্সিজেন সংকটে কি না বলতে পারব না।

আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন আকরাম হোসেন খানের ছেলে তাজ মুহাম্মদ খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা করোনা পজেটিভ ছিলেন। গত ৪৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন। কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছিল। গত কয়েকদিন ধরে এই হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেদিকে নজর দেয়নি। সে কারণে কতগুলো রোগী মারা গেল। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমার বাবাকে হারাতে হলো। সাড়ে ৬টা থেকে অক্সিজেন নাই। রাত ৮টায় অক্সিজেন আসছে। এ সময়ে রোগীগুলো কীভাবে বাঁচবে!

তিনি আরো বলেন, বাবা যখন মারা গেছেন, তখন ফোন দিয়ে আমাদের ডাকছে। আগে থেকে আমাদের জানানো হলে বাবার সঙ্গে শেষ দেখা করতে পারতাম। এখানকার চিকিৎসকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। আমার বাবাকে হারিয়েছি। ভবিষ্যতে এভাবে যেন আর কেউ তার বাবাকে না হারান, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ব্যাপারে বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।

বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে মৃত্যুবরণকারীরা হলেন আইসিইউ ইউনিটের করোনা পজেটিভ রোগী কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আকরাম হোসেন খান (৬৩), সিসিইউ ইউনিটে শহরের ইটাগাছা এলাকার মফিজুল ইসলামের স্ত্রী খাইরুন নেছা (৪০), শহরের কুকরালী আমতলা এলাকার মনিরুজ্জামানের স্ত্রী করোনা আক্রান্ত নাজমা খাতুন, শ্যামনগরের সোনাখালি এলাকার কাশেম গাজীর ছেলে আশরাফ হোসেন, সাধারণ ওয়ার্ডের সন্ধ্যা ৭টার পর মারা যান শ্রীউলা ইউনিয়নের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম পারভেজ (৫৪), কালিগঞ্জের জগন্নাথপুর এলাকার সৈয়দ আলি পাড়ের ছেলে আবু জাফর মো. শফিউল আলম তুহিন, আশাশুনির নৈকাটি এলাকর বেনু গাজির ছেলে আব্দুল হামিদ (৭৫)।

বুধবার রাত ৮টায় সরেজমিনে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের ৪র্থ তলায় আইসিইউ ইউনিট ও সিসিইউনিটের সামনে রোগীর স্বজনদের উপস্থিতি দেখা যায়।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. মানস কুমার মন্ডল বলেন, বিকেল থেকে হাসপাতালে অক্সিজেনের লেভেল কমে যায়। সকালে এ বিষয়ে জানানো হয়েছিল। যশোর থেকে অক্সিজেন নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

তবে সামেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত ই খোদা নওরোজকে সাংবাদিকরা বারবার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোনও রিসিভ করেননি।

More News...

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা