নিজের শিল্পীজীবন নিয়ে এভাবেই বললেন অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান। নিজের ক্যারিয়ারের ব্যাপারে অনেক সচেতন তিনি। খুব বুঝেশুনে নাটক এবং বিজ্ঞাপনে কাজ করছেন। পাচ্ছেন দর্শকের ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তা। একক নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিকেও অভিনয় করছেন। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ারে সাফল্য বা ব্যর্থতার হিসাব-নিকাশ নিয়ে কখনও বসেননি জোভান। তবে একটা হিসাব সব সময় করেন, তা হলো, দর্শকদের ভালোবাসা। এই ১০ বছরের ক্যারিয়ারে দর্শকদের ভালোবাসাই বড় অর্জন হিসেবে দেখেন বলে জানান সমকালকে।

দর্শকদের এই ভালোবাসা পেতে তাকে ত্যাগ কিন্তু কম করতে হয়নি। এ জন্য নিজের ভালোবাসার মানুষকে পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে। জোভান বলেন, ‘অভিনয় ক্যারিয়ারের শুরুতে আমার একজন ভালোবাসার মানুষ ছিল। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে।’ তবে ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে দেওয়া কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল- সে প্রশ্নে যেতে চান না তিনি।

তিনি বলেন, ”২০১১ সালে একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার আশায় অডিশন দিয়েছিলাম। এর পর কয়েকটি বিজ্ঞাপনে মূল মডেলের পেছনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করি। একটা সময় হতাশ হয়ে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিই। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর বন্ধু অভিনেতা সিয়ামের সহযোগিতায় ‘ইউনিভার্সিটি’ নাটকে অভিনয় করি। ধারাবাহিকটি প্রচারের পর একাধিক বিজ্ঞাপনে কাজের প্রস্তাব পাই। সেগুলোর মধ্যে বাংলালিংক সেলফি আর গাজী টিভি- এই দুটি বিজ্ঞাপন আমাকে বিনোদন অঙ্গনে মজবুত এক অবস্থান তৈরি করে দেয়। আর এখন টিভি নাটক, বিজ্ঞাপন দুই জায়গায় সমানতালে কাজ করছি।”

কয়েক বছর আগেও জোভান যে নাটকগুলোতে অভিনয় করতেন, তার প্রায়ই শহুরে চরিত্রের আদলে। এখন সে ধারা বদলেছেন। জোভান এখন হয়ে উঠেছেন বহুমাত্রিক অভিনেতা। জোভান বলেন, ‘আমি চাই সব ধরনের গল্প ও চরিত্রে কাজ করতে। এখন পরিচালকরা আমাকে যেভাবে কাজ করান, যে গল্প নিয়ে ভাবেন, সেগুলোতে কাজ করছি। দর্শকদের কাছেও ভালো সাড়া পাচ্ছি। তাই নিজেকে সব সময় ভাঙতে চাই।”

এদিকে এই সময়ে কয়েকজন অভিনয়শিল্পী নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই কাজ করেন। ঘুরেফিরে তাদের দেখা যায় একই নির্মাতার পরিচালনায়। হাতেগোনা কয়েকজন সহশিল্পীর সঙ্গে। এতে অনেক নির্মাতা চাইলেই কাঙ্ক্ষিত অভিনয়শিল্পীর শিডিউল পান না। গণ্ডি বা একটি সার্কেলের মধ্যে শিডিউল দেওয়াকে ইতিবাচকই দেখেন জোভান। তিনি বলেন, ‘অনেক অভিনয়শিল্পী একটি সার্কেলের বাইরে শিডিউল দেন না। একে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি। কারণ, একটা সার্কেলের মধ্যে কাজ করলে একজন শিল্পীর কমফোর্ট জোন তৈরি হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে জানাশোনা, বোঝাপড়া ভালো থাকার কারণে সবাই কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।’

জোভান আরও জানিয়ে রাখলেন, তারও কিছু পছন্দের নির্মাতা আছেন। তাদের সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে তার কোনো সার্কেল নেই। তিনি সবার পরিচালনায় ভালো গল্পে অভিনয় করতে চান। জোভান এখন ব্যস্ত কোরবানির ঈদের নাটকের কাজ নিয়ে। এ ছাড়া অভিনয় করেছেন ‘মরীচিকা’ নামে একটি ওয়েব ছবিতে। এগুলোর পাশাপাশি সিনেমায়ও অভিনয়ের স্বপ্ন দেখেন জোভান। আর সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন।