শখের কবুতরে বাজিমাৎ, বৃহৎ পরিসরে খামার গড়ার স্বপ্ন স্কুল শিক্ষিকার 

শখের কবুতরে বাজিমাৎ, বৃহৎ পরিসরে খামার গড়ার স্বপ্ন স্কুল শিক্ষিকার 

নুরনবী মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:  করোননাকালীন ছুটিতে শখের বশে কবুতর পালন শুরু করে সুফিয়া বেগম। সেখান থেকেই এখন স্বপ্ন বুনছেন বাণিজ্যিকভাবে খামার গড়ার। প্রায় বছরখানেক আগে শখ করে ৫ জোড়া কবুতর পালন শুরু করেন নিজ বাড়িতেই। এখন সেখানে ৫০ জোড়া কবুতর হয়েছে। একেকটি জাতের কবুতরের মূল্য একেকরকম। জাত অনুযায়ী প্রতি জোড়া কবুতরের মূল্য এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত আছে। বিভিন্ন জাতের কবুতর দেখতে স্থানীয় নারী-পুরুষ ছুটে আসেন তাদের খামারে। 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক এর স্ত্রী সুফিয়া বেগম। তিনি গংগারহাট দাখিল মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষিক হিসেবে কর্মরত আছেন। গত বছরে করনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হলে তিনি নিজ বাড়িতেই শখ করে ১০ টি কবুতর পালন করা শুরু করে দেন। সেই শখের কবুতর বৃদ্ধি হতে হতে এখন ১০০ টি কবুতর এ পরিণত পরিণত হয়েছে। নিজ বাড়িতেই ছোট্ট একটি খামার গড়তে সফল হয়েছেন। এখন শিক্ষকতার পাশাপাশি বৃহৎ পরিসরে বানিজ্যিক ভাবে খামার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। 

সুফিয়ার স্বামী কাঠ ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক জানালেন, তার পলিটেকনিক পড়ুয়া ভাতিজা ঢাকা থেকে বিভিন্ন জাতের পাঁচ জোড়া কবুতর ক্রয় করে এনে দিয়েছিল। সেসব পালন করেই আজ ছোটোখাটো একটা খামারে পরিণত হয়েছে। আর সব মিলিয়ে তাদের খামারে বর্তমানে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার কবুতর আছে। কবুতর পালনে খুব একটা ব্যয় নাই। বড় ব্যয়টা হয় কবুতরের খাবারের জোগান দিতে। গম, ভুট্টা ভাঙ্গা, ডাল, সরিষা, বাজরা সব মিলিয়ে ৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এতে দৈনিক ব্যয় হচ্ছে প্রায় পাঁচশত টাকার মতো। এছাড়াও ছোট বাচ্চগুলোকে বাজার থেকে ক্রয় করা ফীড খাওয়ান। কবুতরের দেখাশোনা সহ সবকিছু তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম করে থাকেন। তিনিও নিজের ব্যবসার পাশাপাশি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। সুফিয়া বেগম জানান, পরিবারের সকলের সহযোগিতায় খামার বেড়ে উঠছে। তাদের খামারে বর্তমানে দেশী ছাড়াও বাগদাদী হোমার, ম্যাগপাই, কালো সিরাজী, কালো মুক্ষী, রেসার, কাগজী, চিলা, গিরিবাজ সহ হরেক জাতের কবুতর পালন করছেন। কবুতর পালনে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না। সময়মতো খাবার-পানি সরবরাহ ও কবুতরের আবাসস্থল পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে সব কবুতরকে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করান। তিনি আগামীতে বৃহৎ পরিসরে খামার গড়ার পরিকল্পনা করছেন। তাই বর্তমানে তার খামার হতে কোনো কবুতর বিক্রয় করছেন না। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এক বছর পর বিক্রয় করা শুরু করবেন। তিনি আরও জানান, যদিও বা তিনি শখের বশে কবুতর পালন শুরু করেছেন, এটি একটি লাভজনক উদ্যোগ। তাই তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি এই কবুতরের খামার গড়ে বাড়তি আয় করতে চান। 

More News...

রোববার থেকে চালের বস্তায় তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক

বিএনপি বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের