সেই লিটনের জায়গায়ই শেষ ম্যাচ খেলবেন নাইম

সেই লিটনের জায়গায়ই শেষ ম্যাচ খেলবেন নাইম

স্পোর্টস ডেস্ক : কী আশ্চর্য্য! জীবন কত অদ্ভুত! লিটন যেদিন বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন, ব্যাটিংই পাননি বাঁহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান নাইম শেখ। অথচ সেই ম্যাচেই অভিষেক হয়েছিল ২১ বছর বয়সী তরুণের। দিনটি ছিল ২০২০ সালের ৬ মার্চ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লিটন দাস খেলেন ১৭৬ রানের অবিস্মরণীয় ইনিংস।

১৪৩ বলে ৮ ছক্কা আর ১৬ বাউন্ডারিতে সাজানো সেই অনিন্দ্য সুন্দর ইনিংসটি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে লেখা রয়েছে স্বর্ণাক্ষরে। কারণ, সেটা শুধু লিটনের ক্যারিয়ারের সেরাই নয়, বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসেরও সবচেয়ে আলো ছড়ানো ইনিংস। যদি দৃষ্টিনন্দন উইলোবাজি, শৈল্পিকতা আর নান্দনিকতাকে মানদন্ড ধরা হয়, তাহলে বাংলাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অনিন্দ্য সুন্দর ওয়ানডে ইনিংস সেটি।

কজনার মনে আছে, লিটনের নৈপুন্যে ভরা সেই ম্যাচেও কিন্তু খেলেছেন নাইম শেখ। লাল সবুজ জার্সি গায়ে একাদশে ছিলেন নাইম। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি। ঘুরিয়ে বললে লিটন-তামিমের জোড়া সেঞ্চুরি ও প্রথম উইকেটে ২৯২ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপের পর নাইম শেখ আর ব্যাটিংই পাননি।

কী করে পাবেন? লিটন-তামিমই খেলে ফেলেন ৪০.৫ ওভার। বাকি ১৩ বলে আর ব্যাটিং করার সুযোগ পান শুধু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। ফলে নাইম শেখের আর ব্যাট করা হয়নি। মানে একটু অন্যভাবে বললে বলাই যায় লিটন দাসের অতিমানবীয় উইলোবাজি আর তামিমের সঙ্গে প্রথম উইকেটে অতবড় পার্টনারশিপের কারণেই ১১ জনে থেকেও ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি নাইমের।

কে জানে, ১৪ মাস ২১ দিন পর সেই লিটন দাসের জায়গায়ই হয়তো ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন নাইম শেখ। সিরিজ বাংলাদেশের হাতের মুঠোয়। তিন ম্যাচ সিরিজের এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টাইগারদের শিরোপা নিশ্চিত। এখন দল নিয়ে, ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করাই যায়।

মূলত লিটন দাসের অব্যাহত খারাপ ফর্ম সুযোগ করে দিয়েছে নাইম শেখকে খেলার। শুক্রবার (২৮ মে) নাইম শেখকে তামিমের সঙ্গে ব্যাট হাতে ওপেন করতে দেখা গেলে মোটেই অবাক হবার কিছু থাকবে না।

লিটন দাস কি এ সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো খেলতে পারবেন? প্রথম ম্যাচ শেষেই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল এ প্রশ্ন। যা আরও ডালপালা গজায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কণ্ঠে। ম্যাচের প্রথম ইনিংসের পর ওপেনার লিটনকে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন পাপন। তার মনে হয়, লিটন আসলে ওপেনার নন, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। লিটনকে ওপেন করানো নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলারও ইচ্ছে পোষণ করেন পাপন।

দ্বিতীয় ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে জানানো হয়, ওপেনার লিটন দাস আরও একটি সুযোগ পাবেন। ঐ ম্যাচে ভাল খেলতে না পারলে শেষ ম্যাচে হয়তো আর তাকে ওপেনার হিসেবে দেখা যাবে না। গত ২৪ মে (সোমবার) রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে খালেদ মাহমুদ সুজন এমন আভাসই দিয়েছিলেন।

সুজন বলেছিলেন, আমরা আশা করছি লিটন দ্বিতীয় ম্যাচেই নিজেকে মেলে ধরতে পারবে। তবে ঐ ম্যাচে রান না পেলে তার শেষ ম্যাচে ওপেন করার সম্ভাবনা খুব কম থাকবে।

তখন কি তাহলে সৌম্য সরকারকে খেলানো হবে? সৌম্যই হবেন তামিমের সঙ্গী? টাইগারদের দলনেতা খালেদ মাহমুদ সুজন জবাবে বলেন, নাহ। সৌম্যও তো অনেক ম্যাচেই ওপেনার হিসেবে খেলেছে। শুরুতে ভাল খেললেও সময়ের প্রবাহতায় নিজের অপরিহার্যতার প্রমাণ দিতে পারেনি। তাই লিটন পরের খেলায় রান করতে না পারলে হয়তো তরুণ নাইমকে সুযোগ দেয়া হবে।

কিন্তু নাইম শেখ তো ১৫ জনের মূল স্কোয়াডে নেই। তাকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে। তবে কি নাইমকে মূল দলে রাখা হবে? মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন সেট হয়ে ২৫ রানে আউট হবার পর থেকে ঐ প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর এক মন্তব্যেও বোঝা যাচ্ছিল নাইমকে নিতে যাচ্ছেন তারা। প্রশ্ন ছিল, প্রথম দুই ম্যাচের জন্য করা ১৫ জনের দল কি বহাল থাকবে? মঙ্গলবার খেলা শেষে জাগো নিউজের সাথে আলাপে নান্নু জানান, প্রথম দুই ম্যাচের জন্য ১৫ জনের দলে পরিবর্তন আসবে। আজ সকালেও তিনি বলেছেন, আমরা ১৫ জনের দল ঠিক রাখব। সাথে একজন স্ট্যান্ডবাই থেকে ঢুকবে। মানে সংখ্যা দাড়াবে ১৬’তে।

সেই একজন কে? তখন তা জানাননি প্রধান নির্বাচক। তবে বোঝাই যাচ্ছিল নাইম শেখই হবে। পরে দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হলো, ১৫ জনের দল অপরিবর্তিত, নতুন করে যুক্ত হয়েছেন নাইম শেখ। আগের ১৫ জন ঠিকই আছে। নতুন অন্তর্ভুক্তি নাইম শেখ।

তার মানে লিটন দাস আর থাকছেন না শেষ ম্যাচে। আর একাদশে থাকলেও ওপেনার হিসেবে হয়তো দেখা যাবে না তাকে। তার বদলে অধিনায়ক তামিমের সঙ্গে শেষ ম্যাচে ওপেন করবেন নাইম। প্রধান নির্বাচক বা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ মুখ ফুটে তা না জানালেও, অবস্থাদৃষ্টে তা-ই মনে হচ্ছে। তার মানে লিটন দাসের জায়গা নিতে যাচ্ছেন নাইম শেখ!

More News...

পৃথিবীর বৃহত্তম দুর্নীতিতে বিজেপি: ভারতের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর মন্তব্য

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল