বিয়ে কমলেও বেড়েছে তালাক

বিয়ে কমলেও বেড়েছে তালাক

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনায় সমাজের সব স্তরেই বিয়ে কমেছে। এর সঙ্গে বেড়েছে তালাকও। তবে দেশের কোনো কোনো গ্রামাঞ্চলে আবার বাল্যবিবাহ বাড়ার ইঙ্গিতও দেখা গেছে ৷ বাংলাদেশ কাজী সমিতির সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর গুলশানের বিবাহ নিবন্ধকের ধারণা, করোনাকালে বিশ্বে অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে, সেটার প্রভাব সেই এলাকায়ও পড়েছে। বিয়ের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। আগে যেখানে মাসে ২৫টা বিয়ে হতো, এখন সেখানে বিয়ে হয় মাত্র ৫টা। একই চিত্র সারাদেশের গ্রামে-গঞ্জে।

বাংলাদেশ কাজী সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জলিল মিয়াজী গুলশান এলাকার কাজী। তার যাতায়াত উচ্চবিত্তদের বিয়েতে। তিনি বলেন, গত বছর করোনার প্রথম ধাপে সরকার যেমন সচেতন ছিল, আমরাও সচেতন ছিলাম। লকডাউনের পুরোটা সময় আমাদের অফিস বন্ধ ছিল। কিছুদিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হলে টেলিফোনে বা স্কাইপে কিছু বিয়ে শুরু হয়।

তিনি জানান, কেবল গুলশান নয়, বিবাহ কমার এই চিত্র সারাদেশের। গ্রামে-গঞ্জে অনেক এলাকায় মাসে একটাও বিয়ে হয় না।

এদিকে দেশে টেলিফোনে বিয়ের চল হয় প্রবাসীদের কারণে। পাত্র প্রবাসে থাকে, সেখান থেকে টেলিফোনে বিয়ে আর রেজিস্ট্রি ডাকে নিবন্ধন- এমন চিত্র বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকায় দেখা যায়। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রেও টেলিফোনে বিয়ে উঠে এসেছে। আর এবার করোনার সময়ে একাধিক স্থানে বসে একত্রে বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতা একেবারে পাল্টে গেছে। টেলিফোনে বিয়েতে বর-কনে প্রবাসে থাকলেও কাজীসহ বাকিরা সবাই একই জায়গায় থাকতেন।

আবদুল জলিল মিয়াজী জানান, তিনি করোনার সময়ে এমন অনেক বিয়ের কাজ করে দিয়েছেন। এগুলো হয়েছে স্কাইপ/ জুমের মতো প্ল্যাটফর্মে। সেখানে কাজী-বর-কনে সবাই ছিলেন যার যার বাসায়/ অফিসে। ভিডিও কলে সম্পাদন করা হয় বিয়ের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে বা পরে সময়-সুযোগ মতো সাবধানতার সাথে নিয়ে আসা হতো বিবাহ নিবন্ধনের স্বাক্ষর।

অন্যদিকে বিয়ে মানেই নানা আয়োজন ও নানা উৎসব। এসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেকের জীবন-জীবিকা। নিবন্ধনে বাধ্যবাধকতা থাকায় বিবাহ কমলেও কাজীরা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পারছে। কিন্তু একেবারেই যেন পথে বসতে শুরু করেছেন ঢাকাসহ সারাদেশের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটরের ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডেকোরেটর সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, করোনা এসে সব বন্ধ করে দেয়। গত ১৪ মাস ধরে এই সেক্টরে কোনো কাজ নেই।

বাংলাদেশ কাজী সমিতির দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, দেশে ১০ হাজারের মতো কাজী রয়েছে। সব বিবাহের ডেটা কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয় না। কাজীরা তাদের বালাম বইয়ে তথ্য সংরক্ষণ করেন।

More News...

র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া