পদ্মা সেতু দেখতে গিয়ে ৩ তরুণের মৃত্যু

পদ্মা সেতু দেখতে গিয়ে ৩ তরুণের মৃত্যু

ফরিদপুর ও নড়াইল প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দায় অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অপর মোটরসাইকেল আরোহীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তিনিও মারা যান।

নিহতরা হলেন, নড়াইল শহরের বাসিন্দা লাহুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিএম নজরুল জমাদ্দারের ছেলে তুর্য (২৩), মহিষখোলার কলেজ শিক্ষক গাজী আমিনুর রহমানের ছেলে রাউফুর রহিম (২২) ও আলাদপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের ছেলে সান (২৩)।

আমাদের ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের নগরকান্দা উপজেলার জয়বাংলা কৌরবালি নামক স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইল থেকে মোটরসাইকেলে তুর্য, রউফ ও সান মাওয়া পদ্মা সেতু দেখার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে জয়বাংলা এলাকায় পৌঁছামাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে তুর্য ও রউফ মারা যান। গুরুতর আহত সানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহ মুকসুদপুর থানায় রাখা হয়েছে। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। অ্যাম্বুলেন্সটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাজাহান চোকদার জানান, জয় বাংলা মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত সানকে প্রথমে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি জানান, তুর্য ও রাউফুর ঘটনাস্থলে এবং সান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

নিহতের পরিবার ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা তিনবন্ধু মিলে সোমবার দুপুরের দিকে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু দেখতে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাওয়া-ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল সড়কের নগরকান্দা জয়বাংলা মোড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি মাইক্রোবাসে তাদের ধাক্কা লাগে। এ সময় মাইক্রোবাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে তুর্য ও রাউফুর রহিম ঘটনাস্থলে মারা যান।

স্থানীয়রা গুরুতর জখম সানকে উদ্ধার করে প্রথমে মোকসেদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে জরুরী চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। গোপালগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে সান মারা যান।

সানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিবেশি সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত আরা।

নিহত রাউফুর রহিমের চাচা গাজী মাহফুজুর রহমান জানান, তারা তিন বন্ধু সোমবার দুপুরে মাওয়া এলাকায় পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিল। সেখানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতদেহ বাড়িতে আনার জন্য পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

নড়াইল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এসএমএ জলিল জানান, নিহতরা ২০১৬ সালে নড়াইল সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে।

নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এর মধ্যে একজনের লাশ নড়াইলে এসেছে।

More News...

বিড়ির শুল্ক প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেল পৌনে ৮ কোটি টাকা