শূন্য তিন আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অর্ধশতাধিক!

শূন্য তিন আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অর্ধশতাধিক!

 

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় সংসদের শূন্য তিন আসনে উপ-নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন তিনজন। কিন্তু দলটি থেকে মনোনয়ন চাইছেন অর্ধশতাধিক প্রার্থী। সিলেট-৩, ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্যদের মৃত্যুর কারণে আসন তিনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এগুলোর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

ইতোমধ্যে এসব আসনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন প্রার্থীরা। সব দলেরই কমবেশি প্রার্থী রয়েছে মাঠে। তবে চোখে পড়ার মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলা-উপজেলা এবং সহযোগী সংগঠনের কেউই বাদ যাচ্ছেন না মনোনয়ন চাওয়ার দৌড়ে। এমনকি এই দৌড়ে শামিল হয়েছেন ব্যবসায়ী, পেশাজীবীসহ জীবনে রাজনীতি করেননি এমন লোকও। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, সবাই নৌকায় উঠতে চান।

প্রার্থী সব সময়ই বেশি থাকে। দল তো ক্ষমতায়, সবাই মনোনয়ন চায়। হেরে গেলে তখন আবার দেখা যাবে প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, যেমন বিএনপি এখন প্রার্থী পাচ্ছে না। সবাই জয়ী পার্টির সঙ্গে থাকতে চায়

তবে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি, বা কার হাতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনদের নৌকার বৈঠা? এমন প্রশ্ন কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের মুখে মুখে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে দলের জন্য যারা সব সময় কাজ করেছেন, নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকায় মানুষের পাশে ছিলেন, গণভিত্তি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন; এমন প্রার্থী খুঁজে মনোনয়ন দেয়া হবে।

জানা গেছে, ঢাকা-১৪ আসনে প্রয়াত এমপি আসলামুক হকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজনীতি করেছেন যুব মহিলা লীগের নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি এখন সেখানে বেশ সক্রিয়। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরীও এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন। ইতোমধ্যে তিনি এই আসনে নানা সামাজিক আচার অনুষ্ঠান করেছেন। এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাজহারুল আনাম, ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানসহ ডজনখানেক নেতা মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন।

কুমিল্লা-৫ আসনটি বুড়িচং ও ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলা দুটি নিয়ে গঠিত। এই আসনে দলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আবদুল মতিন খসরু। তার অবর্তমানে সেখানকার প্রার্থী হিসেবে দুই ডজন নেতা নিজেকে জাহির করছেন। বিভিন্নভাবে তাদের নামও প্রকাশ হয়েছে। অবশ্য, তুলনামূলক আলোচনায় বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মো. নিজামুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু ও মতিন খসরু পরিবারের কয়েকজন।

দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ সংসদীয় আসন। এখানে টানা তিনবার নির্বাচিত হন প্রয়াত মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এই আসনটি মূলত জাতীয় পার্টির দুর্গ। যার কারণে এখানে মহাজোটের শরিক জাতীয় প্রার্টিরও প্রার্থী সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন চাইছেন প্রয়াত এমপির স্ত্রী ফারজানা সামাদ চৌধুরী, প্রয়াত এমপির ছোটো ভাই ও যুক্তরাজ্যের চ্যানেল এস’র চেয়ারম্যান আহমদ উস সামাদ চৌধুরী, বিএমএ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী (দুলাল) ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ অনেকে।

আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, এই দলে সব সময় একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চায়। প্রত্যেকটি আসনে এমপি হওয়ার যোগ্য বহু প্রার্থী থাকে। শূন্য আসনগুলোতেও এমন অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক

দলের মনোনয়নের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা যাকে ভালো মনে করবো, যে যোগ্য এবং এলাকায় জনপ্রিয়তা বেশি, তাকেই প্রাধান্য দেব।’

প্রার্থীর আধিক্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রার্থী সব সময়ই বেশি থাকে। দল তো ক্ষমতায়, সবাই মনোনয়ন চায়। হেরে গেলে তখন আবার দেখা যাবে প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, যেমন বিএনপি এখন প্রার্থী পাচ্ছে না। সবাই জয়ী পার্টির সঙ্গে থাকতে চায়।’

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রার্থীর আধিক্য সব সময় ছিল। আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, এই দলে সব সময় একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চায়। প্রত্যেকটি আসনে এমপি হওয়ার যোগ্য বহু প্রার্থী থাকে। শূন্য আসনগুলোতেও এমন অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘দলের জন্য কাজ ও এলাকায় জনপ্রিয়তার বিষয়টি দেখে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনীত করবে।’

নির্বাচন কমিশন শিডিউল ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে। আর প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। বোর্ড সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা যাকে দেবেন তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি নিশ্চয় যোগ্য লোককেই মনোনয়ন দেবেন

আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন শিডিউল ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে। আর প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। বোর্ড সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা যাকে দেবেন তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি নিশ্চয় যোগ্য লোককেই মনোনয়ন দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বড় দল। যোগ্য লোকের সংখ্যা অনেক বেশি আছে। মনোনয়ন তো চাইবেই। যোগ্য, ত্যাগী, জনপ্রিয় ও দলের প্রতি কমিটমেন্ট আছে তাদের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি যোগ্যকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।’

More News...

কোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল?

সোনার দাম আবার বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা