ফেরিতে মৃত্যুর কারণ হিটস্ট্রোক, ধারণা পুলিশের

ফেরিতে মৃত্যুর কারণ হিটস্ট্রোক, ধারণা পুলিশের

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের পদ্মানদীতে একটি রোরো ফেরিতে আসছিল কয়েক হাজার যাত্রী। ফেরির যানবাহন রাখার খোলা জায়গায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রখর রোদের তাপে ফেরি যখন বাংলাবাজার ঘাটের কাছাকাছি তখনই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে যাত্রীরা। পানি পিপাসা আর গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন তারা। ওই ফেরিতে পার হওয়া একাধিক যাত্রীর বর্ণনা ছিল এমনই।

বুধবার (১২ মে) দুপুরে ফেরিটি বাংলাবাজার ঘাটে ভিড়লে অসুস্থ যাত্রীদের মধ্যে চারজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া পন্টুনে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া অসুস্থ অবস্থায় অর্ধশতাধিক যাত্রীকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে শিমুলিয়া থেকে রোরো ফেরি এনায়েতপুরীতে উঠেন কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ। এনায়েতপুরী ফেরিটি মাঝ পদ্মায় যাওয়ার পরে তীব্র গরমে ফেরির ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এনায়েতপুরী ফেরিটি শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে ভিড়লে দেখা যায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী জ্ঞান হারিয়ে পড়ে রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হওয়ায় ফেরি যখন ঘাটে ভিড়ে তখন হাজার হাজার মানুষে নামতে শুরু করে। এ সময়ই অসুস্থ লোকগুলো চাপে পড়ে মারা যায়।

এদের মধ্যে এক কিশোর, দুইজন নারী ও দুইজন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বালীগ্রাম এলাকার নিপা আক্তার (৩৪) এবং শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলিকা প্রসাদ এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আনচুর মাতুব্বরের (১৪) পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

মৃত নিপা আক্তারের ছেলে রিফাত হোসেন (১৪) কান্নারত অবস্থায় জানান, তার মা ফেরিতে থাকার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে ফেরি যখন ঘাটের ভিড়ে তখন লোকজন নামতে শুরু করে। এসময় সেও ব্যাগ হাতে নেমে আসে। পন্টুনে নামার পর তার মাকে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে থাকে ভিড়ের মধ্যে। লোকজন নেমে গেলে ফেরির ডেকে মৃত অবস্থায় তার মাকে পড়ে থাকতে দেখে সে।

বজলুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ফেরিতে প্রচুর ভিড়। ডেকে বেশিরভাগ যাত্রী গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকে ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে যাওয়া আগেই অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। লোকজনের ভিড়ে আমরা প্রায় শ্বাস নিতে পারছিলাম না। তার ওপর রোদের কড়া তাপ। অনেকেই পানির জন্য চেঁচামেচি করছিল।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, লোকগুলো হিটস্ট্রোকে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ প্রচণ্ড ভিড় আর তীব্র গরম রয়েছে। এ কারণেই এক কিশোর, দুই নারী ও দুই পুরুষ যাত্রীর মৃত্যু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ে অর্ধশতাধিক। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

More News...

র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া