নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ কাটার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সবুজহীনতায় মৃত্যুর উপাখ্যান’শীর্ষক পারফর্মিং আর্ট। রবিবার বিকেলে এই পরিবেশনাটির মধ্য দিয়ে প্রাণ, প্রকৃতি রক্ষা করে উন্নয়নের আহ্বান জানানো হয়। পারফর্মিং আর্টে অংশ নেন অভিনয়শিল্পী কাজী নওশাবা আহমেদ, শাহাদাত রাসেল, মনীষা অর্চি, প্রকৃতি ও ঊষশী। আয়োজনটির ভাবনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন শাহাদাত রাসেল।
সারা বিশ্বে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে যখন সকল সচেতন মানুষ পৃথিবীর নিরাপত্তা ও মানব বিপর্যয় নিয়ে শঙ্কিত এমন সময়ে বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হলো এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী।
অভিনয়শিল্পী নওশাবা আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, “প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন করা কি সত্যিকার অর্থে আমাদের জন্য খুব জরুরি? আমি উন্নয়নের পক্ষে, কিন্তু প্রকৃতি বান্ধব উন্নয়ন চাই। আমি উন্নয়ন বিরোধী নয়। আমার মনে হয়, যে কোনো সংবেদনশীল মানুষই চাইবেন না, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন করতে। প্রকৃতি তো আমাদের শেকড়। তাই শেকড় ছিন্ন এমন উন্নয়ন চাই না।”
এই কর্মসূচি নিয়ে নওশাবা আরও বলেন, ‘আমরা নিরবে আয়োজনটি সম্পন্ন করেছি। আমরা উন্নয়নর বিরুদ্ধে নই, তবে প্রকৃতি বান্ধব- এটা শুধু সোহরাওয়ার্দীর গাছকাটা নিয়েই নয় আমরা পৃথিবীর সব জায়গায় গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ দাঁড়িয়েছি। আমরা প্রতীকী গাছের রূপ ধরে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম। গাছটা কেটে ফেললেই ফাঁসি হয়ে যাবে এমন একটা থিম ছিল। এটাতে আসলে মানব জীবনের অবক্ষয় দেখানো হয়েছে। আবার গাছের কাটা গুঁড়িগুলো নতুন প্রজন্ম পানি দিয়ে সেগুলো সতেজ করে তুলছে। সেটাই ছিল থিম। আসলে আমরা যা ধ্বংস করেছি সেটা তরুণ প্রজন্ম আবার শোধরে নেওয়ার চেষ্টা করছে সেই বিষয়টাও এই থিমের ভেতর দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
আয়োজকেরা জানান, জাতীয়ভাবে ঐতিহ্যবাহী ও বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে ৭ই মার্চের প্রতিটি স্তরের স্মৃতি বিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এভাবে প্রকৃতি ধ্বংস পৃথিবীকেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। প্রকৃতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে সকল প্রাণী ও প্রকৃতিকে নিরাপদ রেখেই এগিয়ে যেতে চাই উন্নয়নের পথে। প্রকৃতি বান্ধব উন্নয়ন চাই। আমরা এই বার্তাটি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছি।