ভারতীয় ধরন শনাক্ত, যশোর বিমানবন্দরে কড়াকড়ি

ভারতীয় ধরন শনাক্ত, যশোর বিমানবন্দরে কড়াকড়ি

নিউজ ডেস্ক : ভারতের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এ কারণে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের স্থলসীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরো ১৪ দিন বাড়ানো হয়েছে। তবে সীমানা বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যানবাহন চলবে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শনিবার অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় স্থলসীমান্ত বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

অন্যদিকে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন ঠেকাতে যশোর বিমানবন্দরেও কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেবিচক বলছে, যশোর বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা নেয়া হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে এক ওয়েবিনারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান এসব কথা বলেন।

মফিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, যশোর বিমানবন্দরে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা করা হচ্ছে। কোনো যাত্রী অসুস্থ পাওয়া গেলে তাকে ফ্লাই করা থেকে বিরত রাখা হবে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শুধু যশোরে না, দেশের যেকোনো স্থানেই এটি পাওয়া যেতে পারে। তবে যশোর বিমানবন্দরে যাতে এটি না ছড়ায়, সে সম্পর্কে সতর্ক আছে বেবিচক।

এদিকে যশোরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারতফেরত যাত্রীদের মধ্যে দুইজনের শরীরে ভারতীয় ভেরিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জোনাম সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। এ অবস্থায় ওই দুই রোগীকে আলাদা করে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ভারত থেকে ফেরার পথে তার সংস্পর্শে আসা সকল ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত ২৬ এপ্রিল থেকে আটকেপড়া বাংলাদেশিরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন। গত ৪ মে পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে এক হাজার ৫৭৭ জন দেশে ফিরেছেন। যাদের বেনাপোলসহ যশোর জেলা ও পার্শবর্তী চার জেলার হোটেলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

এদের মধ্যে ১৬ জন করোনা পজেটিভ যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জোনাম সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে তিনজনের নমুনা পজেটিভ এসেছে। এ তিনজনের মধ্যে দুইজনের শরীরের করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্টের অস্তিত্ব মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জোনাম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ।

ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ভারতীয় ভেরিয়েন্টের নাম্বার হলো বি ১.৬ ১৭.২। তবে এটি ডাবল মিউট্যান্ট নয়। ভারতের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ এ ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। যুক্তরাজ্যে এটি ছিল ৫৯ শতাংশ। তারপরও এ ভেরিয়েন্টের সংক্রামণ রোধে সতর্ক হতে হবে। আমরা আশা করছি যারা ভারত থেকে ফিরবে, তাদের পরীক্ষার পাশাপাশি পৃথক পরিবহন ব্যবস্থায় কোয়ারেন্টাইনে নিতে হবে এবং নেগেটিভ না হওয়া পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।

এদিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে থাকা ওই দুই রোগীকে আলাদা করে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ভারত থেকে ফেরার পথে তার সংস্পর্শে আসা সকল ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যে দুইজনের নমুনায় ভারতীয় ভেরিয়েন্ট মিলেছে, তাদের নমুনার হোল জিনোম সিকোয়েন্স করার উদ্যোগ নিয়েছি।

More News...

পৃথিবীর বৃহত্তম দুর্নীতিতে বিজেপি: ভারতের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর মন্তব্য

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল