সহিংসতার আগুনে জ্বলছে পাকিস্তান

সহিংসতার আগুনে জ্বলছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংহিসতার আগুনে জ্বলছে গোটা পাকিস্তান। দেশটির বিভিন্ন স্থানে ফ্রান্স-বিরোধী সহিংস বিক্ষোভ চলার কারণে ফ্রান্স সেখানে থাকা তাদের সব নাগরিককে সাময়িকভাবে সে দেশ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তানে ফরাসি দূতাবাস থেকে হুঁশিয়ার করা হয়েছে যে ‘পাকিস্তানে ফ্রান্সের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থান ও ব্যক্তিরা গুরুতর হুমকিতে রয়েছে’। দূতাবাস সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছে। খবর বিবিসি।

হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কার্টুন দেখানোর অধিকারের পক্ষে ফ্রান্স যুক্তি দেওয়ার পর পাকিস্তানে কয়েক মাস আগে এই বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল। ফ্রান্সে একটি স্কুলের ক্লাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনার সময় এ ধরনের কার্টুন দেখানোর পর একজন শিক্ষকের শিরশ্ছেদ ঘটনার পর গত বছর অক্টোবর মাসে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ বাকস্বাধীনতার পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন। এর জেরে পাকিস্তানসহ গোটা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পাকিস্তান ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়।

তবে এ দফায় পাকিস্তানের কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই লাব্বায়িক পাকিস্তান (টিএলপি)-এর নেতা সাদ হুসেইন রিজভীকে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করার পর এ প্রতিবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এই দলটি পাকিস্তান থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছিল।

রিজভীর গ্রেপ্তার এবং টিএলপি দলকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর দলের হাজার হাজার সমর্থক পাকিস্তানের রাস্তায় নেমে আসে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছোঁড়ে, এবং টিয়ার গ্যাস ও জল-কামান ব্যবহার করে।

অতীতে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে টিএলপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশাল সংখ্যক মানুষের জমায়েত হয়েছে। পাকিস্তানের আইনে নবীকে অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে দায়ী ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ বলেন, পাকিস্তান নবীর সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে, কিন্তু টিএলপির দাবি মেনে নিলে বিশ্বের চোখে পাকিস্তান একটি উগ্রপন্থী দেশ হিসাবে পরিগণিত হবে।

পাকিস্তানে ফরাসি দূতাবাস গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় এই বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। সেই বিবেচনা থেকে, এবং যেহেতু পাকিস্তানে ফরাসি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব কিছু গুরুতর হুমকির মুখে পড়েছে, ফরাসি নাগরিকদের বর্তমানে চালু থাকা বাণিজ্যিক বিমান ব্যবহার করে সাময়িকভাবে পাকিস্তান ত্যাগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

ফ্রান্সের ব্যাঙ্গাত্মক সাপ্তাহিক পত্রিকা শার্লি হেব্দো নবীর কার্টুন ছাপানো এবং অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করার কারণে ২০১৫ সালে ওই পত্রিকা অফিস লক্ষ্য করে রক্তক্ষয়ী জিহাদী হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান, প্রতিবেশী ইরান এবং অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর রাস্তায় ফ্রান্স-বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভে ফ্রান্সকে বর্জনের ডাক দেয়া হয়।

নভেম্বর মাসে টিএলপি পাকিস্তানে তাদের বিক্ষোভ সাময়িকভাবে স্থগিত করে এই বলে যে পাকিস্তানের মন্ত্রীরা ফরাসি পণ্য বয়কট করতে রাজি হয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মি. ম্যাক্রঁর সমালোচনা করেছিলেন, কিন্তু সরকার ফরাসি পণ্য বয়কট করতে সম্মত হয়েছে এমন দাবি কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। সরকার বলেছে, এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

More News...

ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে, স্টেশনে ভিড়

দ্বীপ উন্নয়ন-কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করতে সংসদকে হাইকোর্টের পরামর্শ